পৃথিবীর সব সুখ-শান্তির শেষ আশ্রয়স্থল হলো মায়ের আঁচল। মায়ের এক চিমটি হাসিতে জমে থাকা সব কষ্ট চলে যায় এক নিমেষেই। শহুরে জীবনের সব ব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে যখন মায়ের কাছে থাকি, মা বলে ডাকি ভালো লাগার হিমেল ছোঁয়া হৃদয় ছুঁয়ে যায়। কর্মময় জীবনের সংস্পর্শে এসে মায়ের কাছে থাকা হয়ে উঠে না সেই ছোটবেলার মতো। মাঝে মাঝে মনে হয় ছোট ছিলাম ভালোই ছিলাম। কেন যে বড় হতে গেলাম। ছোট থাকার মাঝেই যত সুখ যত আনন্দ। এখন কর্মময় জীবনে প্রবেশ করে বুঝলাম।
মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকি বলে সবসময় তিনি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকেন। খাওয়া-দাওয়া চলাফেরা সব কিছু নিয়ে তার বাড়তি চিন্তা। মায়ের কথা শুনে মনে হয় আমি এখনও সেই ছোট ছেলেটি। হয়তো বা তাই হবে, মায়ের কাছে সন্তান সবসময় ছোটই থাকে। সাপ্তাহিক ছুটিতে একদিনের জন্য যখন মায়ের কাছে যাই মায়ের এক চিলতে মিষ্টি হাসিতে মন ভরে যায়। ছেলের জন্য কি করবে আর কি খাওয়াবে দিশেহারা হয়ে যায় মা। আসার সময় ছোট একটা পুঁটলির মধ্যে কিছু না কিছু বেঁধে আমার ব্যাগে দিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে শহরের যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততার কারণে যাওয়া হয়ে ওঠে না মায়ের কাছে। মা অভিমান করে বসে থাকে আমার ওপর।
মায়ের চোখে তখন দেখি মমতায় মাখানো অভিমানী দৃষ্টি। রাগ ভাঙানোর জন্য আলতো করে মাকে জড়িয়ে ধরি বুকের মাঝে। পরক্ষণে উনি হেসে উঠে আর অভিমান ধরে রাখতে পারে না, পরম মমতায় আমাকেও জড়িয়ে নেয় বুকের মাঝে। অনেক সময় নিজের অজান্তে কোনো না কোনো কারণে মা-কে কষ্ট দিয়ে ফেলি। যখন বুঝতে পারি খুব রাগ হয় নিজের উপরÑ কেন এমন করলাম। মা অনেক অনেক ভালোবাসি তোমায়, যা হয়তো প্রকাশ করতে পারি না অন্য সবার মতো করে। জানি অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন এই ছেলেকে নিয়ে। আর তাই ভোরের পাখি হয়ে বের হই সদা তোমার ছোট ছোট স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রয়াসে...
আঁচলে সুখের ছায়া